রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদন :
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান জ্যোতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকার আশুলিয়া থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানী থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার এসপি আহম্মদ মুঈদ।
শেখ হাসিনার পতনের পর তার সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের একের পর এক দুর্নীতি সামনে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ছেলে বাবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।
জানা যায়, সাফি মুদ্দাসিরকে মেসার্স তিতাস বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নামে একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বানিয়ে রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই প্রতিষ্ঠানের নামেই চলত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি। টেকনাফের মিঠাপানির ছড়া ১নং প্লটে ৫ দশমিক ৫০৬৪ একর জমি কেনা হয়। তাছাড়া লেঙ্গুরবিল মৌজায় একই কোম্পানির নামে লম্বরি ২নং পর্টে কোম্পানির নামে কেনা জমির মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।
দুর্নীতিগ্রস্ত আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার ছেলে সাফি মুদ্দাসিরের লুটপাট হাসিনা সরকারের আমলে চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। যার বড় উদাহরণ নির্বাচন কমিশনের অমুছনীয় কালি কেনার দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম থাকায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু অমুছনীয় কালি কিনতেই ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করে সাফি মুদ্দাসির সিন্ডিকেট। এছাড়া আরও ৬ কোটি টাকার অমুছনীয় কালি কেনে নির্বাচন কমিশন। যার টেন্ডার বাগিয়ে নেয় সাফি ও নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গির আলমের আত্মীয়ের যৌথ সিন্ডিকেট।
শুধু এসবই না, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাফি মুদ্দাসিরের দুর্নীতির ফিরিস্তি যেন শেষ হবার নয়।
জানা যায়, রাজধানীর পুরো ধানমন্ডি এলাকায় ছিল তার একচ্ছত্র আধিপত্য। ধানমন্ডি এলাকা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের জন্য বিখ্যাত। আর এসব রেস্টুরেন্ট দেওয়ার জন্য সাফি মুদ্দাসিরকে দিতে হতো ১ থেকে ২ কোটি টাকা। টাকা দিলে কোনো রকম যাচা-বাছাই ছাড়াই মিলত লাইসেন্স। আর লাইসেন্স করতে বাবার প্রভাব খাটাতেন তিনি। শুধু তাই না এসব রেস্টুরেন্ট থেকে যেসব চাঁদা নেওয়া হতো তাও একহাতে সামলাতেন সাফি মুদ্দাসির।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে শুধু রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকেই প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার চাঁদা তোলা হত। ফুটপাতে ব্যবসা, বাজার, মাদক ব্যবসায়ী ও আবাসিক হোটেল থেকে উঠানো হতো এসব চাঁদা। এ টাকা মন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রীর এপিএস মনির হোসেনসহ আরও দুইজনকে। এই টাকার মোটা অংশ পেতেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। পাশাপাশি এই টাকার একটা ভাগ পেতেন তার ছেলে।
এছাড়াও, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীতে যেসব নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য হতো তার মোটা অংকের ভাগ পেতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আর এসব একহাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনির। তিনি একটা অংশ সাবেক মন্ত্রী ছেলে সাফি মুদ্দাসিরকেও দিতেন।